শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪ ।। ১৫ চৈত্র ১৪৩০ ।। ১৯ রমজান ১৪৪৫


হজরত পাহাড়পুরী হুজুরের বরকতময় পদধূলি

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

মুফতী মাহমূদুল আমীন

এক. আহলে দিলের সোহবত অনেক বড়ো নেয়ামত। এ নেয়ামত যার নসীব হয় সেও ধীরে ধীরে আহলে দিল হয়ে যায়। আল্লাহর প্রিয় বন্ধুতে পরিণত হয়। কোনো বয়ান যদি নাও হয় তবুও আল্লাহওয়ালা বান্দার হৃদয়ের তাপ ও উত্তাপ সোহবত গ্রহণকারীর দিলকেও তাপিত করে। আহলুল্লাহর দরদভরা দিলের মহব্বতের আগুন সোহবত গ্রহণকারীর হৃদয়কেও ছুঁয়ে যায়। জনৈক বুযুর্গের ভাষায়,
আগ কি জো খাসিয়াত হ্যায়, ইশ্ক কি ও খাসিয়াত হ্যায়।
এক খানা বা খানা হ্যায় এক সীনা বা সীনা হ্যায়।
অর্থ : ইশ্কের স্বভাব আগুনের স্বভাব, আগুনের মতোই তাহার প্রভাব। এক ঘর থেকে ঘর, আরেক অন্তর থেকে অন্তর।

paharpur2

বুযুর্গ হয়ত প্রিয় নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের নি¤েœ বর্ণিত হাদীসের সারাংশ পেশ করেছেন। হযরত আবু মূসা আশ‘আরী রাযি. থেকে বর্ণিত, প্রিয় নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন, নেককার সহচর ও বদকার সহচরের উদাহরণ হলো, সুগন্ধি বিক্রেতা ও কামারের হাপরের ন্যায়। হয়ত সুগন্ধি বিক্রেতা থেকে সুগন্ধি কিনে নেবে, নতুবা তুমি সুগন্ধির ঘ্রাণ অবশ্যই পাবে; এর অন্যথা হবে না। আর কামারের হাপর হয়ত তোমার শরীর জ্বালিয়ে দেবে বা কাপড় পুড়িয়ে ফেলবে, নতুবা তুমি তার দুর্গন্ধ অবশ্যই পাবে। (সহীহ বুখারী; হা.নং ২১০১)

এ জন্যই মহান রাব্বুল আলামীন আদেশ করেছেন, হে ঈমানদারগণ! তোমরা তাকওয়া হাসিল কর এবং নেক লোকদের সঙ্গ অবলম্বন কর। (‘সূরা তাওবা’- ১১৯)

অর্থাৎ নেক লোকদের সঙ্গ অবলম্বন দ্বারা তাকওয়া অর্জিত হবে। শুধু ইহজীবনেই নয় ইন্তিকালের সময়ও যেন তাঁদের সঙ্গ নসীব হয় সেজন্য আল্লাহ তা‘আলা দু‘আ শিখিয়েছেন, হে আল্লাহ আপনি আমাদের গুনাহগুলোকে মাফ করে দিন আমাদের ভুল-ত্রুটিগুলো মার্জনা করুন এবং নেককার লোকদের সাথে আমাদের মৃত্যু দান করুন। (‘সূরা আলে ইমরান’- ১৯৩)
আর এ দু‘আর কথাগুলোই আল্লাহর এক পেয়ারা বান্দার আশেকানা যবানে এভাবে গুঞ্জরিত হয়েছে,

মেরে যিন্দেগী কা হাসেল জিস্ত কা সাহারা
তেরে আশেকুঁ মেঁ জীনা তেরে আশেকুঁ মেঁ মরনা

আমাদের এ সবুজ বাংলার সবুজ বুকে আল্লাহর বহু আশেক ও পেয়ারা বান্দা যুগে যুগে ছিলেন এবং এখনো আছেন। এ সকল আহলে দিল আল্লাহওয়ালার সোহবত হাসিল করে আমাদের এই কালিমাযুক্ত মৃতপ্রায় অন্তরগুলোকেও আলোকিত ও আল্লাহর প্রেমে জীবন্ত করে তুলতে পারি। হতে পারি আল্লাহ তা‘আলার প্রিয়জন। (আল্লাহ তা‘আলা আমাদেরকে তাওফীক দিন। আমীন।)
দুই. আলহামদুলিল্লাহ! মা’হাদুল বুহুসিল ইসলামিয়ায় মাঝে মাঝেই আল্লাহর ওলীগণ তাশরীফ রাখেন। তাঁদের আগমনে মা’হাদের অঙ্গে অঙ্গে নব চেতনার সঞ্চার হয়। তাঁদের উৎসাহ দু‘আ ও নসীহত আমাদেরকে পথ দেখায়, সাহস জোগায়। আল্লাহওয়ালাগণের আগমনের ধারাবাহিকতায় গত ১৪/০৯/২০১৪ খ্রিস্টাব্দে তাশরীফ এনেছিলেন বাংলার বিশিষ্ট বুযুর্গ হযরত মাওলানা আব্দুল হাই পাহাড়পুরী হুযূর দা.বা.। এর দুই দিন পূর্বে শুক্রবার মা’হাদের সহসভাপতি হাফেয মাওলানা রকীবুল্লাহ ভাইসহ গিয়ে হুযূরের খিদমতে দাওয়াত পেশ করেছিলাম। হুযূর দাওয়াত কবুল করেছিলেন। হুযূরের বড়ো পুত্র মাওলানা আশরাফুয্যামান ও মেজো পুত্র মাওলানা আবরারুয্যামান ভাইও পিতার সাথে মা’হাদে আসবেন বলে সাগ্রহে কথা দিয়েছিলেন। ফিরে এসে মহান রব্বুল আলামীনের কাছে দু‘আ করতে লাগলাম, ‘হুযূর যেন সহীহ সালামতে আমাদের মাঝে আসতে পারেন। তাঁর আগমন যেন সহজ হয়। হুযূরের মন যেন মা’হাদে এসে খুশি হয়। আমরা যেন হুযূরের নেক দু‘আ লাভ করতে পারি। আমাদের থেকে যেন হুযূরের কোনো বে-এহতেরামী প্রকাশ না পায়।’ রোববার ভোর রাতে তাহাজ্জুদ পড়ে তালিবে ইলমগণ আল্লাহর কাছে দু‘আ করলেন। ফজরের নামাযের পূর্বেই সাফাইসহ সব প্রস্তুতি মোটামুটি শেষ হলো। ফজরের একটু পরেই হযরত পাহাড়পুরী হুযূরের দুই বিশিষ্ট শাগরেদ আমাদের উস্তাদ ও মুরব্বী জামি‘আ রাহমানিয়া আরাবিয়ার স্বনামধন্য মুহতামিম হযরত মাওলানা হিফজুর রহমান সাহেব (মুমিনপুরী হুযূর) দা.বা. ও জামি‘আ রাহমানিয়ার শাইখে সানী হযরত মাওলানা আব্দুর রাজ্জাক মানিকগঞ্জী হুযূর দা.বা. আগমন করলেন। মুশফিক ও মুহসিন উস্তাদদ্বয়কে পেয়ে আমরা যারপরনাই খুশি হলাম। বস্তুত মা’হাদের মূল চালিকা শক্তি হলো আমাদের উস্তাদগণের নেক দু‘আ। তাঁদের দু‘আ ও পরামর্শে মা’হাদ জন্ম লাভ করেছে। তাঁদের দু‘আ ও পরামর্শেই মা’হাদ এগিয়ে চলেছে। সময়ে অসময়ে যখনই আবদার করি আসাতিযা হযরত মা’হাদে এসে আমাদেরকে ধন্য করে যান। এটা আমাদের পরম সৌভাগ্য। (হে আল্লাহ! এই সৌভাগ্যকে আমাদের জন্য সর্বদা বহাল রেখো)

paharpur

কিছু নসীহতের জন্য আবদার করলাম। প্রথমে হযরত মানিকগঞ্জী হুযূর নসীহত করলেন, এরপর হযরত মুমিনপুরী হুযূর। ইতোমধ্যে আরো অনেক উলামায়ে কেরাম তাশরীফ এনেছেন। হযরত পাহাড়পুরী হুযূরের খলীফা, আমার পরম মুহসিন উস্তাদ ও মুরুব্বী হযরত মাওলানা আহমাদুল্লাহ সাহেব হুযূর দা.বা.ও এসেছেন। আল্লাহওয়ালাগণের আগমনে মা’হাদের সফেদ আঙিনা আলো ঝলমল হয়ে উঠল। সকাল প্রায় সাড়ে সাতটা নাগাদ হযরত পাহাড়পুরী হুযূর আগমন করলেন। হুযূর বিভিন্ন রোগে খুবই মা’যূর হয়ে পড়েছেন। চোখে খুব সামান্য আবছা আবছা দেখতে পান। নীচতলা থেকে দুজনে ধরে ধীরে ধীরে হুযূরকে দোতলায় উঠালাম। মা’হাদে প্রবেশ করে হলরুমে বয়ানের জন্য নির্দিষ্ট চেয়ারে বসলেন। হযরত মুমিনপুরী হুযূর, মানিকগঞ্জী হুযূর, আহমাদুল্লাহ সাহেব হুযূর প্রমুখ তাঁর সাথে সাক্ষাৎ করলেন। অতি আপন এ সকল বরেণ্য শাগরেদদের সাক্ষাতে হুযূর খুব খুশি হলেন। এরপর বয়ান শুরু করেন। হুযূর বলেন,

ইলমের মারকায বড়ো মূল্যবান, বড়ো মর্যাদাবান। ইলম কেবল আল্লাহ তা‘আলাই দান করেন এবং মানুষকে দান করেন। আল্লাহ তা‘আলা যাকে এই ইলম দান করেন তার মর্যাদা কত উচ্চ, কত মহান, মানুষ তা কল্পনাও করতে পারবে না। এখানের চৌদ্দজন তালিবে ইলম চৌদ্দ হাজার তালিবে ইলমের মর্যাদা রাখেন। একেক জন তালিবে ইলম এক হাজার তালিবে ইলমের মর্যাদা রাখেন। আল্লাহ তা‘আলা এইসব তালিবে ইলমকে কবুল করুন এবং তাদেরকে তালিবে ইলমের প্রকৃত মর্যাদা দান করুন। সবেমাত্র ইফতা বিভাগ খোলা হয়েছে। আল্লাহ তা‘আলা মকতব থেকে শুরু করে শেষ পর্যন্ত চালু করার তাওফীক দান করুন। আমীন।

আরো পড়ুন: শাইখুল হাদিস আল্লামা আব্দুল হাই পাহাড়পুরী আর নেই

সাথে সাথে হুযূর ইলম অর্জনের ক্ষেত্রে সমস্ত শর্ত ও আদবের প্রতি লক্ষ রেখে চলার ব্যাপারে ছাত্রদেরকে মনোযোগী হতে বললেন। বিশেষ করে কেউ যেন ইলম অর্জন করার পর অহমিকায় লিপ্ত না হয়। অযথা মানুষের সাথে তর্কে লিপ্ত না হয়। অতঃপর হুযূর সকলকে বিশেষ করে আহলে ইলমকে আমলের প্রতি গুরুত্ব দেওয়ার ব্যাপারে নসীহত করতে গিয়ে বলেন, তারা যেন সর্বদা খোদার যিকিরে লিপ্ত থাকে। অহেতুক কথাবার্তায় লিপ্ত না হয়। অযথা সময় ক্ষেপণ না করে।

এরপর হুযূর উযূর দু‘আর ব্যাপারে গুরুত্ব দিয়ে বলেন, উযূ ছাড়া নামায হয় না। আমাদের উচিত, আমরা যেন উযূতে কথাবার্তা না বলি। যদি কথা বলতে হয় তাহলে এমন কথা বলব যাতে আল্লাহ তা‘আলা খুশি হন।
এরপর হুযূর আফসোস করে বলেন, কথা বলার জন্য তো আরো অনেক সময় পাওয়া যাবে। উযূতে গিয়েও কি আমাদের কথা বলতে হবে?
শেষে হুযূর বলেন,
এখানে যারা আছেন, আল্লাহ তা‘আলা যেন তাদের একজনকে দেখার দ্বারা এক হাজার জনকে দেখার সওয়াব দান করেন। আমীন।
হুযূরের দরদভরা দিলের তড়প ও আহাজারি আমাদের দিলকেও তাপিত করছিল। হুযূরের প্রতিটি শব্দ শ্রোতাদের হৃদয় ছুঁয়ে যাচ্ছিল। বয়ান শেষে হুযূর মা’হাদের জন্য, মা’হাদের আসাতিযা, তালিবে ইলম, প্রতিষ্ঠাতা, জামিদাতা, শুভাকাক্সিক্ষসহ সবার জন্য দু‘আ করলেন। হুযূরের দু‘আর মাধ্যমে মজলিস শেষ হলো।

দু‘আ শেষে পাহাড়পুরী হুযূর অফিস রুমে এসে বসলেন। জামি‘আ রাহমানিয়া আরাবিয়ার দরসের সময় হয়ে গেছে বিধায় হযরত মুমিনপুরী হুযূর ও মানিকগঞ্জী হুযূর বিদায় নিলেন। বিদায়ের সময় এক মধুর দৃশ্য দেখার তাওফীক হলো। আমাদের মানিকগঞ্জী হুযূর যখন বিদায় চাইলেন পাহাড়পুরী হুযূর দা.বা. তাঁর এ প্রিয় শাগরেদের মাথা নিজের কোলের মধ্যে নিলেন, আর মাথায় হাত বুলাতে বুলাতে বলতে লাগলেন,
-আব্দুর রাজ্জাক যখন নূরীয়ায় পড়ত তখন সে আমার মাথার চুল কেটে দিতো। এখনো যখন আমার চুল কাটার প্রয়োজন হয় তখনই আব্দুর রাজ্জাকের কথা মনে হয়।

তিন. নাশতা পরিবেশিত হলো। আমাদের মা’হাদের সহসভাপতি মাওলানা রকীবুল্লাহ ভাই এবং তার ভায়রা মা’হাদের আবাসন সম্পাদক মাওলানা আশরাফুল ইসলাম সাহেব বাসা থেকে নাশতা রান্না করে এনেছেন। নাশতা শেষে প্রায় সাড়ে নয়টার সময় হুযূর বিদায় নিলেন। বিদায়ের পূর্বে মা’হাদের আসাতিযা, কমিটির সদস্যবৃন্দ ও তালিবুল ইলমগণ একে একে হুযূরের সাথে মুসাফাহা করে দু‘আ নিলেন। আমার ছেলে তিন বছর বয়সি আইমান মাহমূদ সকাল থেকেই পাজামা পাঞ্জাবি পরে মা’হাদে আসার জন্য অপেক্ষায় ছিল। আমি গিয়ে তাঁকে নিয়ে এলাম। হুযূর আইমান মাহমূদের জন্য মন ভরে দু‘আ করলেন। মাথায়-পিঠে হাত বুলিয়ে দিলেন। গাড়িতে উঠার পর হযরত আহমাদুল্লাহ সাহেব হুযূর বিদায়ী মুসাফাহা করলেন। তখন পাহাড়পুরী হুযূর জিজ্ঞাসা করলেন,
-আপনি মা’হাদের সাথে যুক্ত আছেন না কি?
আমি পাশ থেকে বললাম,
-হ্যাঁ, হুযূর আমাদের মুরব্বী।
পাহাড়পুরী হুযূর বললেন,
-খুব ভালো।

এরপর তিনি আহমাদুল্লাহ সাহেব হুযূরের বুকে হাত বুলিয়ে দিলেন এবং বিদায় নিলেন। হযরত পাহাড়পুরী হুযূরের এই ঘণ্টা দুয়েক সময়ের সোহবত আমাদের দিলে এক অন্যরকম হালত পয়দা করল। সবার হৃদয় মিনারে এক অনাবিল প্রশান্তি ছুঁয়ে গেল।
হযরত পাহাড়পুরী হুযূর তাঁর প্রিয় খলিফা আহমাদুল্লাহ সাহেব হুযূরকে খুব মহব্বত করেন। যেদিন পাহাড়পুরী হুযূরকে দাওয়াত দিতে গিয়েছিলাম সেদিন নিজের পরিচয় দিয়েছিলাম এই বলে যে, আমি জামি‘আ রাহমানিয়ার মাওলানা আহমাদুল্লাহ সাহেবের ছাত্র। তখন পাহাড়পুরী হুযূর বলেছিলেন,
-উনার সাথে আমার খুব মহব্বতের সম্পর্ক আছে।

পাহাড়পুরী হুযূর মা’হাদে আগমনের কয়েকদিন পর তাঁর উস্তাদ মাওলানা হেদায়েতুল্লাহ সাহেব (মুহাদ্দিস সাহেব) রহ.এর জীবনী ও স্মারকগ্রন্থ হায়াতে মুহাদ্দিস সাহেব রহমাতুল্লাহি আলাইহি প্রকাশিত হয়। এ গ্রন্থের সংকলক হযরত আহমাদুল্লাহ সাহেবের সাথে আবারো পাহাড়পুরী হুযূরের কাছে গিয়েছিলাম। গ্রন্থটি হাতে পেয়ে খুশিতে হুযূর বাচ্চাদের ন্যায় কান্না শুরু করলেন। অনেকক্ষণ পর্যন্ত অস্বাভাবিক কান্না কাঁদলেন। তাঁর সাথে আমরাও কাঁদলাম। পাহাড়পুরী হুযূর আহমাদুল্লাহ সাহেব হুযূরকে অনেক দু‘আ দিলেন। দু’হাত তুলে কেঁদে কেঁদে আল্লাহ তা‘আলার দরবারে দু‘আ করলেন। বিদায় বেলায় আমি দু‘আর দরখাস্ত করলাম। হুযূর বললেন,
-দিল ফেড়ে তো দেখানো যায় না দিলে যে কত দু‘আ আছে …।

লেখক : মুদীর, মা’হাদুল বুহুসিল ইসলামিয়া
শিক্ষক, জামি‘আ ইসলামিয়া, চরওয়াশপুর, ঢাকা
খতীব, আজিমপুর সরকারি কলোনি (পার্টি হাউস) জামে মসজিদ,আজিমপুর, ঢাকা

লেখাটি চলতি বছরের এপ্রিল মাসে লেখা। সূত্র: মা’হাদুল বুহুসিল ইসলামিয়া

আরআর


সম্পর্কিত খবর


সর্বশেষ সংবাদ