বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৪ ।। ৫ বৈশাখ ১৪৩১ ।। ৯ শাওয়াল ১৪৪৫

শিরোনাম :
উপজেলা নির্বাচনে যাচ্ছে কি ইসলামি দলগুলো? পাঠ্যপুস্তকের ওপর নির্ভরশীল হয়ে স্মার্ট জেনারেশন সৃষ্টি সম্ভব নয়: শিক্ষামন্ত্রী বিচ্ছিন্নভাবে দে‌শের স্বার্থ অর্জন করার সুযোগ নেই : সেনা প্রধান স্বাস্থ্য সুরক্ষা আইন সংসদে পাশ করব : স্বাস্থ্যমন্ত্রী যাত্রাবাড়ীতে দুই বাসের মাঝে পড়ে ট্রাফিক কনস্টেবল আহত আ.লীগের মন্ত্রী-এমপির আত্মীয়দের উপজেলা নির্বাচনে নিষেধাজ্ঞা; অমান্য করলে ব্যবস্থা ফকিহুল মিল্লাত রহ. এর পরামর্শ -‘ফারেগিন কার সঙ্গে পরামর্শ করবে’ ঢাকায় চালু হলো চীনা ভিসা সেন্টার ফিলিস্তিনকে জাতিসংঘের পূর্ণ সদস্য পদ দেওয়া নিয়ে ভোট শুক্রবার ৬ দিনের সফরে থাইল্যান্ড যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী

শোকের কবিতা

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

বাংলাদেশের বাড়ি
মজিদ মাহমুদ

সবারই তো বাড়ি আছে
কেবল যার খেয়ে-পরে বেঁচে আছ
যার জমিতে তোমার ঘর
সেই বাংলাদেশের কোনো বাড়ির কথা বললে
তুমি আতকে ওঠো

একটি নদীকে তুমি বয়ে যেতে দেখ
তাই বলে কি নদীর কোনো উৎসমুখ নেই
নদীর উৎসমুখ থাকে উজানে
স্রোতে ভেসে যাওয়া মানুষ জানতে পারে না

যে বটবৃক্ষের ছায়ায় তুমি বসে আছ
একটি ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র বীজের ভেতর থেকে
সে বেরিয়ে এসেছে
হয়তো পাখির পেটের ভেতর লুকিয়ে ছিল কিছুদিন
হয়তো পাখির বিষ্ঠা-পতনে এখানে উদ্গম হয়েছে
কিন্তু বীজের সত্য কিভাবে অস্বীকার করো

তুমি বলবে বাংলাদেশ তো আগেও ছিল
সত্য, তবে ভাষার আগে ভূখণ্ড ছিল
বীজ ও বৃক্ষের মতো, নদী ও পাহাড়ের মতো
ভাষা ও ভূখণ্ড অবিচ্ছেদ্য বেড়ে উঠেছে

কিন্তু তাদের ঘর ও গৃহস্থলি
তাদের মাটি ও মানুষ
ভাষা ও সংস্কৃতি
পাল, সেন, তুর্কি, সুলতান,
নবাব, ইংরেজ ও পাকদের অধীন ছিল
আর বাংলা না তাদের ভাষা, না তাদের
পিতামহ এখানে জন্মেছিলেন

আবার ইতিহাসের সত্য এমন নয় যে
একদিন তারা সব ছেড়েছুড়ে চলে গেল কিংবা
নটে গাছটি মোড়ানোর মতো গল্প শেষ
হাজার বছরের মিথস্ক্রিয়া, নানা রক্তের মিশ্রণ
তারপর চূড়ান্তভাবে দেশ ও জাতির জন্ম
হয়তো তখন সেটা একটা কুঁড়েঘর ছিল
হয়তো তখন সেটা একটা চারাগাছ ছিল
হয়তো তখন তারা একবেলা না খেয়ে থাকতো
আকবরের সাম্রাজ্য সুসংগঠিত হলেও
বাবর কি তাদের পিতা নয়

আর সেটি কবে এবং কোথা থেকে শুরু-
এ প্রশ্ন তো তুমি এড়িয়ে যেতে পার না
কারণ প্রত্যেকের একটি পিতা থাকে
অনেক পিতা মিলে এক বৃহত্তর পিতা
আর তিনিই তো জাতির পিতা

শোনো, উদাস মাঝি কী নামে আজ হাঁকে
মতিন রায়হান

ফুল-পাখিরা হল্লা করে দেখো
ভুল শেখো না ইতিহাসের কথা
কতোকিছু শেখার আছে শেখো ;
ছিলেন তিনি রূপকথার এক নায়ক
কণ্ঠে ছিল বজ্র সুরের গান
তাঁর নামটি বুকের মাঝে রেখো।

ছিলেন তিনি প্রাণবাজির এক গায়ক
চাইলে তাঁকে খুব নিকটেই পাবে
জীবন-নদীর বাঁকে
টুঙ্গিপাড়া কিংবা অজগাঁয়ে
শহরেও আছেন তিনি পালতোলা এক নায়ে
শোনো, উদাস মাঝি কী নামে আজ হাঁকে!

তোমার জন্য
রহীম শাহ

যতদিন এই দেশের মাটিতে
একটি মানুষ থাকবে
ততদিন ধরে বঙ্গবন্ধু—
তোমাকেই মনে রাখবে।

পাখিদের গানে, বাতাসের সুরে
তোমার নামটি আসে ঘুরে ঘুরে

সাগর-নদী ও ঝরনাধারায়
চিরদিন তুমি ভাসবে
দূর থেকে দূরে ঘুরে ঘুরে ঠিকই
ফিরে ফিরে তুমি আসবে।

এ দেশের মাঠ এ দেশের বন
তোমাকেই নিয়ে ভাবে সারাক্ষণ

নীল আকাশের তারা হয়ে তুমি
সবার হৃদয়ে ফুটবে,
তোমার নামেই মানুষ ঘুমাবে
তোমার নামেই উঠবে।

পিতা, একবার বলে যাও
মাহবুব আলম

পিতা, তুমিহীন এই বাংলা আজ ভুতুড়ে শ্মশান
বারবার মাটি ফুঁড়ে জন্ম নিচ্ছে
শত-শত অলৌকিক প্রেতাত্মা আচানক,
আজ যেখানেই চোখ রাখি
সেখানেই শুধু অন্ধকার,
মানুষের ধূসর মানচিত্র;

গভীর খাদে আটকে গেছে স্বদেশের চাকা
কোথাও কোন উদাস বিকেল নেই, স্নিগ্ধ ভোর নেই
রাত্রির সৌন্দর্য বিলীন, বৃষ্টিহীন প্রান্তর
দাউ-দাউ পুড়ছে তোমার বাংলার সবুজ বৃক্ষরাজি
তুমিহীন পিতা,
সর্বত্র-ই আঁধারের ঘনঘটা;

পিতা, তুমি ছাড়া জাতি আজ
কাণ্ডারীছিন্ন জাহাজের মতো দিশেহারা
তোমার প্রিয় মুক্তিযোদ্ধারা কবরের স্তব্ধতা বুকে ধারণ করে
বেবাক তাকিয়ে দেখছে পশুদের তুমুল নৃত্য,
আজ রাজাকার আর স্বৈরাচার সব মিলে একাকার;

পিতা, আর কতো চোখ বুজে থাকবো অন্ধ মূর্তির মতো
আর কতো কানে চেপে রাখবো বিষাদের বিশাল পাথর,
পিতা, কার কাছে বলবো আজ দুঃখের কথা-বেদনার কথা
পিতা, কার কাছে তুলে ধরবো আজ
আমার গুরুতর অভিযোগগুলো
পিতা, আজ রাজাকারের প্রশস্ত কপাল জুড়ে উড়ছে
তোমার স্বাধীন-স্বদেশের রক্তাক্ত পতাকা;

পিতা, কতো কিছু হয়ে যাচ্ছে প্রতিনিয়ত তোমার ছাপ্পান্ন হাজার বর্গমাইলে
তুমি কি দেখতে পাচ্ছো কিংবা শুনতে পাচ্ছো আমাদের অনুনাদ,
তোমাকে কিন্তু ভীষণ বকবো আড়ালে,
তুমি কি এভাবে লুকিয়ে থাকবে অনন্তকাল:
আমি সর্বক্ষণ দেখতে পাই তুমি শুয়ে আছো বিশাল মানচিত্র জুড়ে;

এদেশের নদীর কলকল শব্দে শুনতে পাই তোমার নাম
এদেশের পাখির কণ্ঠে শুনতে পাই তোমার গান
এদেশের আকাশে-সবুজ মাঠে দেখতে পাই তোমার রাঙা পোস্টার
পিতা, তুমি একবার এসে দেখে যাও আমরা কী দারুণ অসহায়
পিতা, তুমি আর একবার এসে বলে যাও---
এদেশ আমার, আমাদের, মুক্তিযোদ্ধার, বাঙালীর;
স্বৈরাচার কিংবা রাজাকারের নয়।

আমরা শোকাহত
তাসনুবা তাবাসসুম

আপনার বাসন্তীরঙা শাড়ি!!
বড্ড বেমানান;
আপনি জানেননা?
শোকে আজ আমরা মুহ্যমান।
মিশমিশে কালো শোক
স্যুটটা দেখুন---
কালোর ভালো হোক।
বুটিক হাউজ,ডেকোরেটর,
সংগীতসশিল্পী,ফুলের দোকানি
শোকের ব্যস্ততা বুঝি দেখনি!!
বিবর্ণ এবং কালো সমার্থক হোক
প্রয়োজনে চিনে নেবে লোক
একবিংশ শতাব্দীতে
শোকের পিঠে লাগুক পালক।

একটাই তার,
অজস্র সুরের ভোরেজেনেছে বাজনদার।

যখন একটি মাত্র সুর,
হাজার কথার ভিড়ে জাগে শান্ত সমুদ্দুর।

একজনই যখন নেতা,
একক বলতে বুঝি- বাঙালি জাতির পিতা।

১৫ আগস্ট
কবির কল্লোল

দেয়ালে শোক টাঙিয়ে রেখে
আমরা অংক কষি-
স্লোগানের অনুপাতে ভুরিভোজের পরিমাণ নিয়ে।

কেউ কেউ প্রতিভা দেখিয়ে
কুড়িয়ে নেয় পয়সাকড়ি, কেউ কেউ নৈকট্য খুঁজে
পুজে যায় পারিবারিক পদযুগল।

কেউ কেউ আমার মতো নিরীহ ছন্দের দোল
কবিতায় তুলে নিয়ে মিছিমিছি কাঁদে।
ব্যানারের বাজার চড়চড় ক'রে বেড়ে যায়।

কেউ গান করে। কেউ বাজায়।
পাতিনেতার পকেট ফুলে টেপামাছ,
কালোব্যাজের পয়সা বাঁচিয়ে রাতে তার পানের পসরা।

এখন তো ফেসবুকই কান্নায় ভরা
নানাবিধ ইমোকটিনে। কান্নাতেও উৎসব
কান্নার আয়োজনে ঘটা ক'রে ভাড়া করে বীণা

উৎসব! উৎসব দেখি। শোক তো দেখি না।

বঙ্গবন্ধু জাতির জনক শেখ মুজিবুর রহমান
খালেদ হোসাইন

মৃত্যুতে সব ফুরিয়ে যায় না-- চিত্ত যদি হয় অফুরান
আমার আকাশ আমার বাতাস-- সবই তো তোমার অবদান।
এই যে আমার স্বাধীন চলা, বিশ্ব-সভায় উন্নত শির
এই যে আমার স্বাধীন বলা-- সুনীল গ্রহ এই পৃথিবীর
দিকদিগন্তে ছড়িয়ে পড়ে সব অপরূপ ও অনন্য
সবই তো হয় জাতির জনক বঙ্গবন্ধু তোমার জন্য।
কে তোমাকে হত্যা করে-- অন্ধকারের কীটানুকীট?
জানে না যে তোমার মাথায় চিরকালীন আলোর কিরীট--
জানে না যে এই জাতিকে তুমি দিলে মুক্তি-দিশা
তুমি দিলে স্বাধীনতার ধ্রুবতারা, শতভিষা?
তোমার স্বপ্নে তোমার কর্মে এই বাঙালি আজকে ধন্য
সব হয়েছে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর তোমার জন্য।
তোমার যারা হত্যাকারী শেয়াল-শকুন মানবেতর
মুখোশ এঁটে লুকিয়ে ছিল ঘন অন্ধকারের ভেতর
হঠাৎ ওরা হামলে পড়ে হত্যা করে সপরিবার--
নির্মমতার নিষ্ঠুরতার এমন নজির ঘটেনি আর
এই পৃথিবীর কোনো প্রান্তে-- যা লজ্জাকর যা জঘন্য
মৃত্যুও তাই পরাস্ত হয় শেখ মুজিবুর তোমার জন্য।
এক মুজিবের রক্ত থেকে জন্মে মুজিব ঘরে ঘরে--
তোমার স্বপ্ন চোখে বুনে বীরের জীবন যাপন করে
হত্যাকারীর সত্তা বিনাশ করবে বলে শপথ গ্রহণ
করে তারা, নইলে যে অন্তরের দহন
পুড়িয়ে তাদের ভস্ম করে, মানুষ বলে হয় না গণ্য--
চেতনার এই অগ্নি-আভা বঙ্গবন্ধু তোমার জন্য।
বঙ্গবন্ধু তোমার বসত সব বাঙালির রক্তকণায়
তোমার জন্য বুকের ভেতর ভালোবাসার আবেগ ঘনায়
তোমার জন্য কলুষমুক্ত-- এই মানবিক জীবন-যাপন
বিশ্বচরাচরে তুমি বীর বাঙালির সবচে আপন
যে চেতনা তোমার, পিতা, তা গড়েছে এ চৈতন্য
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর আমরা বাঁচি তোমার জন্য।

শেখ মুজিবুর
মুনীরুল ইসলাম

একাত্তরে কে বলেছে-
বীর বাঙালি জাগুন
যার যা আছে তা নিয়েই
দেশের কাজে লাগুন?

কে জ্বেলেছে লক্ষ প্রাণে
স্বদেশ প্রেমের আগুন
কে এনেছে বাংলাদেশে
স্বাধীনতার ফাগুন?

‘তিনি হলেন শেখ মুজিবুর’
সবার মনে দাগুন
তাঁর জন্য প্রভুর কাছে
হাজার রহম মাগুন।

জগলুল হায়দার এর বারোভাজা

মুক্তির মুখে লিখা- মুজিব এক কাব্য
তার নামে গোটা দেশ গ্রীষ্মেও নাব্য,
ভাবলেই স্বাধীনতা, সকলেই তার কথা
ঘুরেফিরে বারবার শতবার ভাববো।

মহামানব
সিমরান আহমদ

চশমার নিচে চোখদুটো এর বয়স কত ?
যখন শকুনে খাওয়া লাশের পরে বুলিয়েছ সে চোখ আর ফেরাতে পারোনি ।
ঝলসানো রুটির ভেতর দিয়েই দেখেছিলে জোস্নালোকিত বাংলার মুখ।
পরগাছাদের তরে খুইয়েছো জীবন

.অথচ মূল্য দেয়না কেউ !
শুধু প্লাবিত হৃদয়ের শুন্য ক্যানভাসের মতো
মায়ের চোখে দেখেছো বিস্তৃত বাংলার সবুজ শস্যক্ষেত্র ।
তোমার গানের কম্পনে কেঁপেছে বিশ্ব দুয়ার ।
তোমার আঙ্গুলের ব্যাক্তিত্বে মেতেছিল বাংলার মুক্তিকামী জনতা।
অথচ বয়স কত দুটি চোখের ?
প্রশ্ন উত্তর খুঁজতে গিয়ে খুঁজে পেয়েছি হাতিদের জলজ্যান্ত ফসিল
আজো যার চোখ থেকে ঝড়ে পড়ছে অজস্র মৃত নক্ষত্রের রাত।
অথচ চশমার নিচে চোখদুটো এর বয়স কত ?

খুঁজি
কামরুল আরেফিন

জাতীয় শোকদিবস
করণীয় কী বস?
এতো কী আর বুঝি
সঠিকতা খুজি।

ফুল দেয়া কী ভুল
তাতে কিসের দুল-
কষ্ট কিবা শোক;
না,খিচুরির ভোগ।

ও মিয়া ভাই বল
মিথ্যা দলে চল।


সম্পর্কিত খবর


সর্বশেষ সংবাদ