বৃহস্পতিবার, ০২ মে ২০২৪ ।। ১৯ বৈশাখ ১৪৩১ ।। ২৩ শাওয়াল ১৪৪৫


প্রধানমন্ত্রীর হাতে তুলে দেয়া হলো ‘লক্ষ আলেমের ফতোয়া’

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

PM-at-Olama-conference-bg20160811142434 copy

আওয়ার ইসলাম : আজ বৃহস্পতিবার রাজধানীর কৃষিবিদ ইনস্টিটিউটে ‘ইসলামের দৃষ্টিতে সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদ এবং আমাদের করণীয়’ শীর্ষক উলামা সম্মেলনে মাওলানা ফরীদ উদ্দীন মাসউদ কর্তৃক সংগৃহিত সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদ বিরোধী ১ লক্ষ আলেমের ফতোয়া’র কপি মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর হাতে তুলে দেয়া হয়েছে।

ধর্মের নামে যারা জঙ্গি ও সন্ত্রাসবাদ ছড়িয়ে অশান্তি সৃষ্টির পাঁয়তারা করছে, তাদের প্রতিহত করতে ইসলামের সঠিক বার্তা নিয়ে বাংলাদেশ জমিয়তুল উলামা দেশব্যাপী প্রায় লক্ষাধিক উলামার স্বাক্ষর সম্বলিত বিশেষ ফতোয়া জারি করে। আজ ওই ফতোয়ার কপি প্রধানমন্ত্রীর হাতে তুলে দেন জমিয়তের সভাপতি সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদবিরোধী ফতোয়া সংগ্রহ কমিটির আহ্বায়ক মাওলানা ফরিদ উদ্দীন মাসউদ।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

জমিয়তুল উলামার এ উদ্যোগের প্রশংসা করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আপনারা মানবকল্যাণ ও শান্তির জন্য একটা মহৎ উদ্যোগ নিয়েছেন, এজন্য আপনাদের ধন্যবাদ জানাই। এটা আপনাদের নিজেদের কোনো সৃষ্টি নয়, সন্ত্রাস-জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে পবিত্র কো‍রানে যা আছে, নবী করিম (স.) যা বলেছেন, তা থেকেই জাতির জন্য এই ফতোয়া তৈরি করেছেন আপনারা। এতে ইসলামের প্রতি মানুষের যে আস্থা ও বিশ্বাস তা অটুট থাকবে। এটা বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে দিতে হবে এ কারণে যে, যেন সবাই বোঝে, যারা ইসলামের নামে সন্ত্রাস-জঙ্গিবাদী তৎপরতা চালাচ্ছে তারা আসলে এ ধর্মের কেউ নয়।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, পৃথিবীর সবচেয়ে মানবিক ও উদার, শান্তি-সৌহার্দ্য ও সহনশীলতার ধর্ম ইসলাম। সবচেয়ে দুঃখ লাগে যখন সামান্য কিছু লোক ধর্মের নাম ব্যবহার করে সন্ত্রাস চালাচ্ছে, মানুষ হত্যা করছে। আমাদের পবিত্র ধর্মকে হেয় করছে। যখন কোনো আন্তর্জাতিক সম্মেলনে যাই, কেউ ইসলামিস্ট টেরোরিস্ট বললে আমি সঙ্গে সঙ্গে তার প্রতিবাদ করি। সন্ত্রাসী কোনো ধর্মের হতে পারে না। কিন্তু ভাবতে আমার নিজেরও কষ্ট লাগে। সামান্য কয়েকটা লোক কোথায় নিয়ে গেল আমাদের শান্তির ধর্মকে।

পবিত্র কোরানের একটি আয়াতের উদ্ধৃতি দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, কেউ কোনো ব্যক্তিকে হত্যা করলে সে যেন গোটা মানবজাতিকে হত্যা করলো। আর কেউ যদি কোনো ব্যক্তিকে রক্ষা, করে সে যেন গোটা মানবজাতিকে রক্ষা করলো। আরেকটি আয়াতের উদ্ধৃতি দিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, নিশ্চয়ই আল্লাহ মানুষ হত্যাকারী ও দুর্যোগ সৃষ্টিকারীদের পছন্দ করেন না।

সন্ত্রাসী ও জঙ্গিবাদী কর্মকাণ্ডে জড়িতদের নিন্দা জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, তারা কোরআন, হাদিস, ইসলামের পবিত্র বাণী মানবে না, নামাজ না পড়ে মানুষ খুন করতে যায়, তারা কী করে বেহেশতে যাবে। তারা কী করে ভাবে, তারা মানুষ খুন করে বেহেশতে যাবে।

সম্মেলনে আলেম সমাজের পক্ষ থেকে কওমী মাদ্রাসা সনদ দেওয়ার উদ্যোগ বাস্তবায়নের দাবির প্রেক্ষিতে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সনদ দিতে হলে ন্যূনতম একটা কারিকুলাম দরকার। আমরা কওমী মাদ্রাসা কমিশন গঠন করে দিয়েছি। কিন্তু কওমী মাদ্রাসার পাঁচটি বোর্ড একমত হতে পারেনি। সবাইকে একমত হওয়ার আহ্বান জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, সবাই একমত হোন অথবা যারা আগ্রহী তারা একমত হোন, আমরা বাস্তবায়ন শুরু করে দেবো।

সারাদেশে প্রতিটি জেলা-উপজেলায় ৫৬০টি মসজিদ ও ইসলামিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্র প্রতিষ্ঠার পরিকল্পনার কথাও জানান প্রধানমন্ত্রী।

অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন ধর্মমন্ত্রী অধ্যক্ষ মতিউর রহমান, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল।

স্বাগত বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ জমিয়াতুল উলামার সভাপতি মাওলানা ফরিদউদ্দীন মাসউদ। সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদের নিন্দা জানিয়ে মাওলানা ফরিদউদ্দীন মাসউদ বলেন, ইসলাম উদারতা ও সহনশীলতার ধর্ম। কিছু সংখ্যক মতলববাজ ইসলামকে ক্ষতিগ্রস্ত করছে। ইসলামে অনর্থক গাছের পাতাও ছেঁড়া নিষেধ উল্লেখ করে তিনি বলেন, যারা মনে করে মানুষ হত্যা করে বেহেশতে চলে যাবে, তারা আসলে জাহান্নামে যাবে। যারা মানুষ হত্যা করে, আত্মহত্যা করে তারা উভয়ই জাহান্নামে যাবে।
এফএফ


সম্পর্কিত খবর


সর্বশেষ সংবাদ