বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪ ।। ১১ বৈশাখ ১৪৩১ ।। ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫

শিরোনাম :
‘মানতিক; যুগের চাহিদার সাথে মিলে না’ এ ধরেণের কথা অযৌক্তিক: মুফতি হিফজুর রহমান দাওরায়ে হাদিসের ফলাফল নজরে সানীর আবেদনের সময় বাকি ৩ দিন  বৃষ্টি প্রার্থনায় জামিয়াতুল আবরার রাহমানিয়ায় ‘সালাতুল ইস্তিসকা’  আদায় হাসপাতালে সৌদি বাদশাহ সালমান সোস্যাল মিডিয়ায় প্রচারিত পাঠ্য তালিকার সাথে বেফাকের পাঠ্য তালিকার সম্পর্ক নেই: বেফাক সৈয়দপুরে তাপদাহে অতিষ্ঠ মানুষ, ‘হিটস্ট্রোকে’ ১ জনের মৃত্যু স্বর্ণের দাম আরও কমলো, ভরি ১ লাখ ১৪ হাজার ১৫১ টাকা ইসরায়েলের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান ইরান-পাকিস্তানের ঢাবিতে বৃষ্টির জন্য ‘সালাতুল ইসতিস্কা’র অনুমতি দেয়নি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ‘বৃষ্টির জন্যে সালাত আদায় করলেই অবশ্যম্ভাবী বৃষ্টি চলে আসবে—বিষয়টা তা নয়’

নামাজে কব্জির উপর হাত বেঁধে নাভির নিচে রাখা সুন্নত

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

Namajমাওলানা শাহিদুল ইসলাম শাহিন

নামাজে বাম কব্জির উপর ডান হাত রেখে দু’আঙ্গুল দ্বারা চেপে ধরা সুন্নত। একাধিক সহীহ হাদীস দ্বারা এ আমল প্রমাণিত । চার মাযহাবের সকল ইমাম ও আলেম এটাকেই সুন্নত পদ্ধতি আখ্যা দিয়েছেন। পক্ষান্তরে কনুই পর্যন্ত হাত রাখার পক্ষে কোন হাদীস নেই। পূর্বসূরিগণের কারো আমলও নেই। এমনিভাবে নাভির নীচে হাত রাখা সুন্নত। ইমাম আবূ হানীফা র. ও ইমাম আহমদ ইবনে হাম্বল র. দুজনই এটাকে সুন্নত বলেছেন। ইমাম মালেক রহ. এর মত হলো, ফরজ নামাযে হাত ছেড়ে রাখা সুন্নত। আর ইমাম শাফেয়ী রহ. বলেছেন, বুকের নীচে হাত বাঁধা সুন্নত।

বুকের উপর হাত বাঁধাকে চার ইমামের কেউই সুন্নত বলেননি। কোন মুহাদ্দিস বুকের উপর হাত বেঁধেছেন এমন তথ্যও পাওয়া যায়নি। এমনকি কোন মুহাদ্দিস এ সম্পর্কে কোন শিরোনামও উল্লেখ করেন নি। এসম্পর্কে যে হাদীসটি পেশ করা হয় সেটি সহীহ নয়। এ আলোচনার শেষ দিকে সেটি সম্পর্কে বিস্তারিত পর্যালোচনা আসছে। এখানে প্রথমত হাত বাঁধার পদ্ধতি সম্পর্কিত সহীহ হাদীসগুলো পেশ করা হচ্ছে। অতঃপর নাভির নিচে হাত রাখা সম্পর্কে হাদীসগুলো তুলে ধরা হচ্ছে।

হাত বাঁধার নিয়ম সম্পর্কিত হাদীস ১. হযরত সাহল ইবনে সা’দ রা. বলেন,

كَانَ النَّاسُ يُؤْمَرُونَ أَنْ يَضَعَ الرَّجُلُ الْيَدَ الْيُمْنَى عَلَى ذِرَاعِهِ الْيُسْرَى فِي الصَّلَاةِ. صحيح البخاري (٧٤٠ )، موطا مالك برواية أبي مصعب الزهري (৪২৬)، مسند أحمد (২২৮৪৯)، مستخرج أبي عوانة (১৫৯৭)، الطبراني في الكبير (৫৭৭২)، البيهقي (২৩২৬)، البغوي في شرح السنة (৫৬৮)، الأوسط لابن المنذر (১২৮৬).

অর্থ : মানুষকে এই আদেশ দেওয়া হতো যে, তারা যেন নামাযে ডান হাত বাম হাতের বাহুর উপর রাখে। বুখারী শরীফ, হাদীস নং ৭৪০; মুআত্তা মালেক, হাদীস নং ৪২৬; মুসনাদে আহমদ, হাদীস নং ২২৮৪৯; মুসতাখরাজে আবী আওয়ানা, হাদীস নং ১৫৯৭; তাবারানী ফিল কাবীর, হাদীস নং ৫৭৭২; বায়হাকী, হাদীস নং ২৩২৬; শারহুস সুন্নাহ, হাদীস নং ৫৬৮; আওসাত লিইবনিল মুনযির, হাদীস নং ১২৮৬।

২. হযরত ওয়াইল ইবনে হুজর রা. বলেন,

قُلْتُ لأَنْظُرَنَّ إِلَى صَلاَةِ رَسُولِ اللَّهِ -صلى الله عليه وسلم- كَيْفَ يُصَلِّى فنظرت إليه فَقَامَ فَكَبَّرَ وَرَفَعَ يَدَيْهِ حَتَّى حَاذَتَا بأُذُنَيْهِ ثُمَّ وَضَعَ يَدَهُ الْيُمْنَى عَلَى كَفِّهِ الْيُسْرَى وَالرُّسْغِ وَالسَّاعِدِ. أخرجه أبو داود (٧٢٧) والنسائي (٨٨٩) واللفظ له وأحمد ٤/٣١٨ وابن خزيمة (٤٨٠) وابن حبان (১৮৬০) وابن الجارود في المنتقى (২০৮) والبيهقي في السنن (২/২৭) بإسناد صحيح.

অর্থ: আমি (মনে মনে) বললাম, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কিভাবে নামায পড়েন তা আমি লক্ষ্য করবো। আমি লক্ষ্য করলাম, তিনি দাঁড়িয়ে তাকবীর বললেন এবং উভয় হাত কান বরাবর তুললেন। অতঃপর তাঁর ডান হাত বাম হাতের পিঠ, কব্জি ও বাহুর উপর রাখলেন। আবূ দাউদ শরীফ, হাদীস নং ৭২৭; নাসাঈ শরীফ, হাদীস নং ৮৮৯; মুসনাদে আহমদ ৪খ, ৩১৮পৃ; সহীহ ইবনে খুযায়মা, হাদীস নং ৪৮০; ইবনে হিব্বান, হাদীস নং ১৮৬০; আলমুনতাকা লিইবনিল জারূদ, হাদীস নং ২০৮ ও বায়হাকী ২খ. ২৭ পৃ.। এ হাদীসটি সহীহ।

ইবনে খুযায়মা র. উক্ত হাদীসের উপর শিরোনাম দিয়েছেন, باب وضع بطن الكف اليمنى على الكف اليسرى والرسغ والساعد جميعا অর্থাৎ ডান হাতের তালু বাম হাতের তালুর পিঠ, কব্জি ও বাহু সবগুলোর উপর রাখবে।

একইভাবে ইবনুল মুনযির রহ. তার আল আওসাত গ্রন্থে শিরোনাম দিয়েছেন, ذكر وضع بطن كف اليمنى على ظهر كف اليسرى والرسغ والساعد جميعا অর্থাৎ ডান হাতের তালু বাম হাতের তালুর পিঠ কব্জি ও কব্জিসংলগ্ন বাহুর উপর রাখার আলোচনা।

وعند الدارمي ١/٢٨٣ بإسناد صحيح في حديث وَائِلٍ قَالَ رَأَيْتُ رَسُولَ اللَّهِ يَضَعُ يَدَهُ الْيُمْنَى عَلَى الْيُسْرَى قَرِيباً مِنَ الرُّصْغِ .

অর্থাৎ দারিমী র. এর এক বর্ণনায় সহীহ সনদে ওয়াইল ইবনে হুজর রা. থেকে বর্ণিত আছে, তিনি বলেছেন, আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে ডান হাত বাম হাতের কব্জির কাছাকাছি রাখতে দেখেছি। সুনানে দারিমী, ১খ, ২৮৩পৃ। আবূ দাউদ শরীফের আরেক বর্ণনায় আছে, ثم أخذ شماله بيمينه অর্থাৎ অতঃপর তিনি (রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) ডান হাত দ্বারা বাম হাত ধরলেন। সুনানে আবু দাউদ, হাদীস ৭২৬; মুসনাদে আহমদ, হাদীস ১৮৮৫০; সুনানে নাসাঈ, হাদীস ১২৬৫; সহীহ ইবনে খুযায়মা, হাদীস ৪৭৭; সহীহ ইবনে হিব্বান, হাদীস ১৯৪৫; মুজামে কাবীর লিত তাবারানী, ২২/৩৩; সুনানে বায়হাকী, হাদীস ২৫১৬।

৩. হযরত হুলব আততাঈ রা. বলেন,

كان رسول الله صلى الله عليه وسلم يؤمنا فيأخذ شماله بيمينه. أخرجه الترمذي (٢٥٢) وابن ماجه (٨٠٩) وابن أبي شيبة (٣٩٥٥) والدارقطني ١/٢٨٥ وقال الترمذي: حديث حسن.

অর্থ: রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদের ইমাম হতেন। তিনি ডান হাত দ্বারা বাম হাত চেপে ধরতেন। তিরমিযী শরীফ

এআর


সম্পর্কিত খবর


সর্বশেষ সংবাদ