শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ।। ১৩ বৈশাখ ১৪৩১ ।। ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫


যেভাবে হামলার সূত্রপাত

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

Untitled-1 copyস্টাফ রিপোর্টার : যারা শোলাকিয়া ময়দানে নামাজ পড়তে গিয়েছিলেন তাদের কয়েকজন জানিয়েছেন, ময়দানের অদূরে একটি অজুখানায় এক ব্যক্তির কাছে ব্যাগ দেখে এগিয়ে তল্লাশী করতে যান পুলিশের কনস্টেবল জহিরুল (হক নিহত)। এ সময় কয়েকজন সন্ত্রাসী বোমা বিস্ফোরণ ও গুলি চালাতে শুরু করে। একই সঙ্গে হামলাকারীরা পুলিশ সদস্য জহিরুলকে একাধিকবার ছুরিকাঘাত করা হয়। অন্যান্য পুলিশ সদস্য এসময় এগিয়ে এলে সন্ত্রাসীরা হাতবোমার বিস্ফোরণ ঘটায়। এসময় পুলিশ ও সন্ত্রাসীদের মধ্যে গুলি বিনিময় শুরু হয়।

এ সন্ত্রাসী হামলায় পুলিশ সদস্য জহিরুল হক ও আনসারুল মারা যায়। মারা যায় আরেক হামলাকারী সন্ত্রাসী। শোলাকিয়া ঈদগা থেকে এক কিলোমিটারের মধ্যে এধরনের সন্ত্রাসী হামলার ঘটনা ঘটে। হামলায় আহত হয়েছে পুলিশ সহ অন্তত ১১ জন। গুরুতর ৬ পুলিশ সদস্যকে ময়মনসিংহ সিএমএইচ হাসপাতালে চিকিৎসার জন্যে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। আহতদের মধ্যে বেশির ভাগই পুলিশ। এ ঘটনায় দুজনকে আটক করা হয়েছে বলে পুলিশ জানিয়েছে।

কিশোরগঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আবু সায়েম বলেন, নিহত দুজনের মধ্যে একজন পুলিশের কনস্টেবল। তাঁর নাম জহিরুল হক (৩৫)। আরেকজনের পরিচয় জানা যায়নি। হামলাস্থল থেকে চাপাতি ও বোমাসদৃশ বিস্ফোরক উদ্ধার করা হয়েছে। এ ছাড়া গুলিসহ একটি রিভলবার উদ্ধার করা হয়েছে। আহতেরা কিশোরগঞ্জ সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।

প্রত্যক্ষদর্শীরা বলছে, ঈদের জামাতের আগে শোলাকিয়া ঈদগাহ থেকে এক কিলোমিটার দূরত্বের মধ্যে আজিমুদ্দিন স্কুলের পাশে টহলরত পুলিশের ওপর দুর্বৃত্তরা হামলা চালায়। দুর্বৃত্তদের ছোড়া বিস্ফোরক ও গুলিতে হতাহতের ঘটনা ঘটে। হামলার ঘটনায় শোলাকিয়া ময়দানে থাকা মুসল্লিদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। পরে নির্বিঘ্নে ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হয়েছে বলে পুলিশ জানিয়েছে।

প্রত্যক্ষদর্শী আরেক ব্যাবসায়ী শোভন জানান, পুলিশের সন্দেহ হলে এক ব্যক্তির ব্যাগে তল্লাশী চালানোর সময় ওই ব্যক্তি দ্রুত পুলিশের ওপর হামলা চালায়। পুলিশকে ওই ব্যক্তি ছুরিকাঘাত করে। এতে ঘটনাস্থলেই পুলিশের কনস্টেবল জহিরুল হকের মৃত্যু হয়।
শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত পুলিশ শোলাকিয়া মাঠে যাওয়ার প্রধান রাস্তা স্টেশন রোড, গৌরাঙ্গবাজারের আশপাশের সব রাস্তা বন্ধ করে দিয়েছে। আজিমুদ্দিন স্কুলের চারপাশ আইনশৃঙ্খলাবাহিনীর সদস্যরা ঘিরে রেখেছেন। সেখান থেকে গুলির শব্দ পাওয়া যাচ্ছে বলে আশপাশের মানুষেরা জানিয়েছে।

বুধবার ফেসবুকে আইএস জঙ্গি পরিচয় দিয়ে তিন যুবক বাংলাদেশে আরো সন্ত্রাসী হামলার হুমকি দেয়। এরপর ঈদের দিন এধরনের হামলার ঘটনা ঘটল।

ঘটনাস্থল থেকে আমাদের কিশোরগঞ্জ প্রতিনিধি জানিয়েছেন, সকাল পৌণে নয়টায় ৯টায় শোলাকিয়া ময়দানের অদূরে আজিম উদ্দিন স্কুলের একটি গেটে প্রথমবার সন্ত্রাসীরা হাত বোমা বিস্ফোরণ ঘটায়। এর আধঘন্টা পর ফের আরেকবার হামলা চালায় সন্ত্রাসীরা। স্থানীয় আজিম উদ্দিন স্কুলের পাশের একটি বাড়ি ঘিরে রেখেছে পুলিশ। সেখান থেকেই হামলা চালানো হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। আত্মরক্ষার্থে পুলিশও সন্ত্রাসীদের লক্ষ্য করে গুলি ছোড়ে।

হামলার পরপরই র‌্যাব ও পুলিশের যৌথ অভিযান শুরু হয়। এ হামলার পর শোলাকিয়া ঈদগা ময়দানে আগত মুসল্লিদের মনে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। তারপরও লাখো মুসল্লির ঢল নামে দেশের ঐতিহাসিক এই ঈদগা ময়দানে। নির্ধারিত সময়ে ঈদের জামায়াত অনুষ্ঠিত হয়।

আওয়ার ইসলাম টোয়েন্টিফোর/ওএস


সম্পর্কিত খবর


সর্বশেষ সংবাদ