বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪ ।। ১২ বৈশাখ ১৪৩১ ।। ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫


আলেমরা যা বললেন

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

alem ulamaa copyস্টাফ রিপোর্টার : দুই পবিত্র শহর মক্কা ও মদিনা। রাসুল সা. এর জন্ম ও নিবাস ভূমি। মদিনার মাটিতে শুয়ে আছেন আল্লাহ প্রিয় বন্ধু হযরত মুহাম্মদ সা.। আর পবিত্র রমজান মাসে বরকতময় ইফতারের সময়ে মদিনার ভূমিতে আঘাত হানে জঙ্গিগোষ্ঠী। মসজিদে নববীর পাশে আত্মঘাতি হামলায় কাঁপিয়ে দেওয়া হয় মদিনার মাটি ও মানুষকে। হামলায় নিহত হয় নিরাপত্তাবাহিনীর চার সদস্য।

আত্মঘাতি হামলার প্রতিবাদে নিন্দার ঝড় উঠে বিশ্বময়। গোটা বিশ্বের মুসলিম উম্মাহ হামলার প্রতিবাদ ও নিন্দা জানাচ্ছেন। সৌদি আরবের সর্বোচ্চ ওলেমা পরিষদ বলেছে, এই হামলার মধ্য দিয়ে “সকল পবিত্রতাকে হামলাকারীরা পদদলিত করেছে।”

পবিত্র ভূমিতে হামলার প্রতিবাদে নিন্দা জানিয়েছেন বাংলাদেশেরও অনেক রাজনৈতিক দল ও সংগঠন। নিন্দা জানিয়েছেন শীর্ষ আলেম ওলামা ও ধর্মীয় নেতারা। আওয়ার ইসলাম টোয়েন্টিফোর ডটকমের পক্ষ থেকে তাদের মতামত নিয়েছেন, ওমর শাহ।

এ হামলা রাফেজী শিয়াদের

মাওলানা উবায়দুর রহমান খান নদভী
সহকারী সম্পাদক, দৈনিক ইনকিলাব

nadvi_ourislam24পবিত্র রমজান মাসে মসজিদে নববীর পাশে হামলা খুবই ভয়াবহ ব্যাপার। সৌদি আরবে এত নিরাপত্তার মাঝেও এ হামলাটি সহজভাবে মেনে নেওয়া কষ্টকর। এ হামলার পেছনে রাফেজি শিয়াদের ও আইএসের হাত রয়েছে। কোন মুসলমান এ হত্যাকাণ্ড ঘটাতে পারে না। যে কোন হত্যাকান্ডে আইএসের দায় শিকার একটি ফ্যাশন হয়ে দাঁড়িয়েছে। এগুলো গোটা বিশ্বের মুসলিদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র। এসব খুন, হত্যার সঙ্গে ইসলামের কোন সম্পর্ক নেই। আমরা এ হামলায় তীব্র নিন্দা জানাই। সেই সঙ্গে দেশীয় ও আন্তর্জাতিকভাবে মুসলিম উম্মাহকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে এসব সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে।

প্রয়োজন আন্তর্জাতিক মুসলিম ঐক্য

ড. আ ফ ম খালিদ হোসেন
অধ্যাপক, ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি, ওমর গণি এম ই এস ডিগ্রী কলেজ, চট্টগ্রাম।

1907563_10203194018481974_753342257_nমসজিদে নববীর পাশে হামলা খুবই দু:খজনক। ধর্মের নাম ব্যবহার করে এ হামলা চালানো হয়েছে। এসব কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে গোটা বিশ্বে ইসলাম সম্পর্কে একটি ভুল ম্যাসেজ যাচ্ছে। ইসলাম যেখানে সহমর্মিতা, ভ্রাতৃত্ব ও শান্তির ধর্ম সেখানে ইসলামের নামে এ ধরণের কর্মকাণ্ড ইসলাম সমর্থন করে না। নবী সা. যুদ্ধের ময়দানেও নারী, শিশু ও বৃদ্ধদের হত্যার জন্য নিষেধ করেছেন। সেখানে নিরীহ প্রাণ হত্যা তো কোন ক্রমেই জায়েজ নয়। এগুলো ইসলামের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্র। কোন মুসলমানের পক্ষে মদিনার মাটিতে হামলা করা সম্ভব নয়।

 

মদিনায় হামলাকারীর প্রতি সকল মানবজাতির অভিশাপ

শায়খ আহমাদুল্লাহ
দাঈ : পশ্চিম দাম্মাম ইসলামি সেন্টার, সৌদি আরব

aaaপ্রিয় নবীর প্রিয় শহর মদিনা। বহু হাদীসে তিনি পবিত্র এই নগরীর মর্যাদার নানা দিক বর্ণনা করেছেন, ঘোষণা করেছেন, এই শহরে বসবাসকারীদের বিশেষ মর্যাদার কথা। বোখারী ও মুসলিমের এক বর্ণনায় মদীনাকে তিনি সম্মানিত শহর বলে ঘোষণা করেন এবং মদীনার জন্য বরকতের দু’আ করেন। সুতরাং মদীনার নিরাপত্তা ও মর্যাদা রক্ষা করা সকল মুমিনের ঈমানি দায়িত্ব। মুসলিমের অপর এক এক বর্ণনায় তিনি বলেন, মদিনার প্রবেশ পথে ফিরিশতাগণ প্রহরারত। (কিয়ামতের পূর্বে পৃথিবির সব শহরে দাজ্জাল ত্রাশ চালালেও) সেখানে দাজ্জাল প্রবেশ করতে পারবে না। আবু হুরায়রা রা. বলেন, আবুল কাসিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, যে ব্যক্তি এই শহরের অর্থাৎ মদিনার অধিবাসীদের ক্ষতি করতে চাইবে আল্লাহ তাকে এমনভাবে গলিয়ে দিবেন যেমন লবণ পানিতে গলে যায়। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, মদীনা সম্মানিত নগরী। যে ব্যক্তি সেখানে কোন অপ্রীতিকর কাণ্ড ঘটাবে, অথবা এ ধরণের দূষ্কৃতিকারীকে প্রশ্রয় দিবে তার প্রতি আল্লাহ এবং ফেরেশতাগণ ও সকল মানব জাতির অভিশাপ। ( বোখারী ও মুসলিম) এসব বর্ণনার আলোকে মদীনার নিরাপত্তা বিঘ্ন করা আল্লাহর নবী ও ইসলামের বিরুদ্ধে যুদ্ধের শামিল।

ইমতিয়াজ বিন মাহতাব
ইমাম ও খতীব, বাংলাদেশ রেশম গবেষণা ও প্রশিক্ষণ ইন্সটিটিউট জামে মসজিদ, রাজশাহী।
imtiyaz-446x250মুসলমানদের অন্যতম পবিত্র ভ‚মি মসজিদে হারামের মাটিতে এ ধরণের হামলা মানে গোটা মুসলিমবিশ্বের মুসলমানদের বুকে হামলা। আমরা এ হামলা কোন ক্রমেই মেনে নিতে পারছি না। এসব আজ বড় দুশ্চিন্তার বিষয়। ইসলামের নামে যারা ইসলামবিরোধী কর্মকাণ্ড চালাচ্ছে তারা ইসলামের শত্রু। এসব ততাকথিত জেহাদের নামে জেহাদ করার সময় এসেছে। এসব সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড প্রতিরোধে গোটা বিশ্বের মুসলমানের রাজনৈতিক মতাদর্শ ভুলে দলমত নির্বিশেষে ঐক্য প্রয়োজন।

ওয়ালি উল্লাহ আরমান

কেন্দ্রীয় সম্পাদক মন্ডলীর সদস্য, জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম।

oliullah armanমুসলমানদের প্রিয় ভূমি মদিনায় হামলা কোন মুসলমানই মেনে নিতে পারে না। কোন মুসলমানের পক্ষে এ হামলা করা সম্ভবও নয়। এ হামলা ইসলামের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রেরই অংশ। আজ সারা বিশ্বে মুসলিম বিশ্বের নেতৃত্ব ভেঙ্গে পড়ার কারণেই শত্রুরা এ সুযোগ নিচ্ছে। মুসলিম বিশ্বের ঐক্যবদ্ধ না হলে এ হামলা প্রতিরোধ করা সম্ভব নয়। মদিনার মাটিতে আত্মঘাতি হামলা প্রতিটি মুসলমানের হৃদয়ে আঘাত হেনেছে। সারা বিশ্বজুড়ে তথাকথিত আইএসের নামে যে হামলা জঙ্গি কর্মকাণ্ড হচ্ছে এসব কোন মুসলমানের কাজ নয়। এসব বিষয়ে মুসলমানদের আরও সচেতন হওয়া উচিত।

 

আওয়ার ইসলাম টোয়েন্টিফোর ডটকম/ওএস


সম্পর্কিত খবর


সর্বশেষ সংবাদ