শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪ ।। ৭ বৈশাখ ১৪৩১ ।। ১১ শাওয়াল ১৪৪৫


ঈদে গরিবদের অর্থ সহযোগিতা করা দায়িত্ববোধের অংশ

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

বিশ্বব্যাপী মুসলমানদের অন্যতম প্রধান ধর্মীয় উৎসব পবিত্র ঈদুল ফিতর। অনাবিল আনন্দের মধ্য দিয়ে তা উদযাপিত হয়ে থাকে। দীর্ঘ একমাস সিয়াম সাধনার পর ঈদ আসে মহামিলনের সওগাত নিয়ে। পরস্পরের মেলবন্ধনে আবদ্ধ করে নতুন ভাবে। এই ঈদকে সামনে রেখে নানামুখি মানুষের আয়োজন থাকে নানা রকমের। থাকে বিশেষ ভাবনা-পরিকল্পনাও। এবারের ঈদভাবনা জানাতে শরিয়তপুরের কজন তরুণ আলেম মুখোমুখি হন আওয়ার ইসলামের। আলোচনার চুম্বকাংশ তুলে ধরেন আমিন হানিফ


মুফতি খোরশেদ আলম কাসেমী
দেশে দাওরায়ে হাদিস [মাস্টার্স] সমাপ্ত করে ভারতের বিদ্যাপীঠ দারুল উলুম দেওবন্দ থেকে তাখাসসুস ফিল ইফতা কোর্স করেন। এরপর দারুল ইহসান ইউনিভার্সিটি থেকে অনার্স করেন। বর্তমানে তিনি বাংলাদেশ জাতীয় মুফতি বোর্ডের চেয়ারম্যান। শরিয়তপুর ওলামা পরিষদের সভাপতি।

khurshedকর্মজীবনে নিজের প্রতিষ্ঠিত নুরুল হারামাইন মাদরাসা ও শরিয়তপুর জেলায় প্রতিষ্ঠিত ইক্বরা মাদরাসার প্রিন্সিপ্যালের দায়িত্বে নিয়োজিত। এলিফেন্ট রোড মাল্টিপ্লান শপিংসেন্টার জামে মসজিদের খতিবের দায়িত্বে নিয়োজিত। এছাড়াও এ বছর রমজান উপলক্ষে এশিয়ান টিভিতে 'সুয়াল জওয়াব' অনুষ্ঠান করেছেন।

আওয়ার ইসলাম : এবারের ঈদ নিয়ে আপনার ও আপনার পরিবারকে ঘিরে কী পরিকল্পনা?
মুফতি খোরশেদ : ঈদ মানে আনন্দ। ঈদ মানে খুশি। এই আনন্দ উপভোগ করার জন্য প্রতিটি মানুষেরই পরিকল্পনা থাকে। তবে এ বছর আমার ব্যতিক্রমী কোন আয়োজন নেই। সবার মত আমিও আমার পরিবার, মা-বাবা ও কাছের মানুষগুলোকে নিয়ে ঈদ উদযাপন করার আশা রাখছি।

আওয়ার ইসলাম : আপনি শরিয়তপুর ওলামা পরিষদের বর্তমান সভাপতি। আপনাদের ওলামা পরিষদের সংক্ষিপ্ত কর্মসূচি সম্পর্কে যদি কিছু বলেন।
মুফতি খোরশেদ : আমাদের এই পরিষদ মৌলিক দশদফা ভিত্তিতে কার্যক্রম পরিচালনা করে থাকে। তার সংক্ষেপ বিবরণ- বাৎসরিক ওলামা সম্মেলন। মাদরাসা শিক্ষাবোর্ড পরীক্ষাউত্তীর্ণ ছাত্র-ছাত্রীদের মেধা উৎসাহ। শরিয়তপুর জেলা মোট ৭টি থানার প্রতিটি থানায় একটি করে পাঠাগার স্থাপন। ৭টি থানায় বাৎসরিক ইসলামি মহাসম্মেলন। গরিব অসহায় শিক্ষার্থীদের লেখাপড়া খরচ বহন। শরিয়তপুর জেলাব্যাপী ওলামায়ে কেরামের ঐক্য। বিদাত কুসংস্কার বিরোধী আন্দোলন। সময়ের বড় ফেতনাবাজ লা-মাযজাবিদের বিরুদ্ধে কঠোর সংগ্রামসহ নানান কর্মসূচি নিয়ে আমাদের অগ্রযাত্রা।

আওয়ার ইসলাম : আপনাদের ওলামা পরিষদের পক্ষ থেকে এবারের ঈদে গরিব অসহায়দের জন্য কী পদক্ষেপ?
মুফতি খোরশেদ : পরিষদের পক্ষ থেকে আমরা তেমন বড়সড় আয়োজন এবছর করতে পারি নি। পরিকল্পনা মোতাবেক এগুচ্ছি। তবে আমি আমার আসপাশের গরিব অসহায়দের জন্য কিছু উদ্যোগ নিয়েছি। যাতে তারা অন্তত ঈদের দিনটাকে আনন্দে উপভোগ করতে পারে। একটু স্বস্তি অনুভব করে।

masumমাদরাসায়ে নুরে মদিনার প্রতিষ্ঠাতা প্রিন্সিপাল হাফেজ মাওলানা কামরুল ইসলাম। ইসলামি জাগরণ শিল্পীগোষ্ঠীর প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক। তিনি 'বহুমুখী জনকণল্যাণ সামাজিক সংগঠনে'র সঙ্গে জড়িত। অসহায় মানবতার পাশে দাঁড়ানো, অর্থ অভাবে যেসব পরিবার উপযুক্ত কণ্যা বিয়ে দিতে পারে না, তাদের সহযোগিতা করাই তার সংগঠনের প্রধান দায়িত্ব।

আওয়ার ইসলাম : ঈদুল ফিতর উপলক্ষে আপনার কি পরিকল্পনা?
মাও. কামরুল : প্রতিটি ঈদের মত এবারের ঈদেও পরিকল্পনা আছে। যেমন, পরিবারের সবাইকে নিয়ে ঈদ আনন্দ উপভোগ করা। নিজের পরিবারের মত আরো আটদশটা অসহায় পরিবার নিয়ে ভাবতে হয়। তাদের অর্থ সহযোগিতা করাও দায়িত্ববোধের অংশ। বিশেষ করে এবার কিছু ঈমানদার মুসল্লিদের জন্য নতুন পাঞ্জাবির ব্যবস্থা করেছি। যারা এগুলো পেয়ে যারপরনাই খুশি। আমি মনে করি এটাই আমার ঈদ এবং স্বার্থক পরিকল্পনা।

আওয়ার ইসলাম : ঈদকে আরো প্রাণবন্ত ও নির্মল করে তুলতে সমাজে কি কি পদক্ষেপ নেয়া উচিৎ মনে করেন?
মাও. কামরুল : সবাই জানি ঈদ মানে আনন্দ। সাথে এটাও মানতে হবে যে, এটা একটা ঈবাদত। এই ঈদকে অনেকেই ঈবাদত মনে না করে, সাধারণ সাংস্কৃতিক উৎসব মনে করে থাকে এবং অশ্লীল কাজেও শামিল হয়। তাই আমি মনে করি, সমাজের প্রতিটি মসজিদের ইমামগণের, এ বিষয়ে জনগণকে সতর্ক করা অবশ্যক। রাসূল সা. ঈদের আনন্দ কীভাবে উপভোগ করেছেন, উম্মতের জন্য কী আদর্শ রেখে গেছেন? তা বয়ান করা।

kamrulশরিয়তপুর জজকোর্ট জামেমসজিদের ইমাম ও খতিব মাওলানা মাসুম বিল্লাহ কাশমিরী। ঈদ বিষয়ে কথা হয় এই আলেমের সঙ্গে। ঈদ উৎসব ও ঈদ আনন্দ সবার মধ্যে ভাগাভাগি নিয়ে সুন্দর কথা বলেন মওলানা মাসুম।

আওয়ার ইসলামঃ এবারের ঈদে আপনার পাশের গরিব অসহায়দের নিয়ে আপনার ভাবনা কী?
মাও. মাসুম বিল্লাহ : নিজেকে ও নিজের পরিবারকে নিয়ে যেমন ভাবি, তেমন আমার অসহায় প্রতিবেশীদের নিয়েও ভাবি। সাধ্যমত তাদের সহযোগিতা করি।

আওয়ার ইসলাম : আপনার এলাকার আলেমদের সমাজ সেবায় আপনি কি সন্তুষ্ট?
মাও. মাসুম বিল্লাহ : আলহামদুলিল্লাহ। আগেরচে সেবামূলক কাজে অগ্রসর আমাদের আলেমসমাজ। আমি মনে করি শুধু তালিম তরবিয়তই নয়, আলেমদের জনকণল্যাণকর কাজে আরো এগিয়ে আসা দরকার।

আওয়ার ইসলাম : মোবারক হোক আপনাদের অগ্রযাত্রা।
মাও. মাসুম বিল্লাহ : শুভ হোক, বিপ্লব ঘটুক, আওয়ার ইসলাম টোয়েন্টিফোর এর পথ চলা।

আওয়ার ইসলাম টোয়েন্টিফোর ডটকম /রোকন


সম্পর্কিত খবর


সর্বশেষ সংবাদ