বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪ ।। ১৪ চৈত্র ১৪৩০ ।। ১৮ রমজান ১৪৪৫


এমপিরা সভাপতি নয়

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

haicortডেস্ক রিপোর্ট : শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সভাপতি পদে থাকতে পারবে না সংসদ সদস্যরা। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সভাপতি পদে সংসদ সদস্যদের থাকার বিধান রহিত করে হাইকোর্টের দেয়া রায় বহাল রেখেছেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ। তবে অভিভাবক প্রতিনিধি হিসেবে নির্বাচিত হলে দায়িত্ব পালন করতে পারবেন বলে জানিয়েছে হাইকোর্ট।

রায় স্থগিত চেয়ে ভিখারুননিসা নুন স্কুল অ্যান্ড কলেজের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি বিমান ও পর্যটনমন্ত্রী রাশেদ খান মেনন এমপির করা আবেদনের শুনানি করে আদালত আজ রোববার এ আদেশ দেন। এ রায়ের ফলে তিনিও আর ভিখারুনেনিসার সভাপতির পদে থাকতে পারছেন না।

প্রধান বিচারপতি এসকে সিনহার নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চ এ রায় বহাল রাখেন। আদালতে রিট আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট ইউনুছ আলী আখন্দ। অপরদিকে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম।

গত ১ জুন বেসরকারি মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের গভর্নিং বডি ও ম্যানেজিং কমিটি প্রবিধানমালা-২০০৯-এর ৫/১ এবং ৫০ ধারা বাতিল করে এ রায় দেন বিচারপতি জিনাত আরা ও বিচারপতি একেএম জহিরুল হকের বেঞ্চ।

আদালত থেকে বেরিয়ে আইনজীবী ইউনুছ আখন্দ জানান, সর্বোচ্চ আদালত রাষ্ট্রপক্ষের আবেদনের বিষয়ে নো অর্ডার দিয়ে হাইকোর্টের রায় বহাল থাকবে বলে উল্লেখ করেছেন। এর ফলে এ বিধান অনুযায়ী সংসদ সদস্যরা স্কুল-কলেজের গভর্নিং বডির সভাপতি থাকতে বা হতে পারবেন না ।

তিনি বলেন, ‘মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের প্রবিধানমালা ২০০৯-এর ৫  ও ৫০ ধারার বৈধতা চ্যালেঞ্জ করা হয়েছিলো। এর মধ্যে ৫ ধারা হচ্ছে এমপিদের সভাপতি পদ ও ৫০ ধারা হচ্ছে বিশেষ কমিটি গঠন নিয়ে। আদালত দু’টি ধারাই বাতিল ও সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক ঘোষণা করেছেন।’

মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক অধ্যাদেশের (১৯৬১) আওতায় ‘মাধ্যমিক উচ্চ মাধ্যমিক স্তরের বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের গভর্নিং বডি ও ম্যানেজিং কমিটি প্রবিধানমালা-২০০৯ এর ৫ ধারা (গভর্নিংবডির সভাপতি মনোনয়ন) এর (১) উপ-বিধিতে বলা হয়েছে, ‘কোনো স্থানীয় নির্বাচিত সংসদ সদস্য তার নির্বাচনী এলাকায় অবস্থিত বোর্ড কর্তৃক স্বীকৃতিপ্রাপ্ত এমন সংখ্যক উচ্চ মাধ্যমিক স্তরের বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের গভর্নিং বডির সভাপতির দ্বায়িত্ব গ্রহণ করতে পারবেন’।

‘(২) উপ-বিধান ১ এর অধীন সভাপতির দায়িত্ব গ্রহণের জন্য স্থানীয় নির্বাচিত সংসদ সদস্য, তার নির্বাচনী এলাকায় অবস্থিত যেসব উচ্চ মাধ্যমিক স্তরের বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের দায়িত্ব গ্রহণ করতে ইচ্ছুক তার উল্লেখসহ লিখিতভাবে এ প্রবিধানমালার অধীন বোর্ডের চেয়ারম্যানের কাছে তার অভিপ্রায় ব্যক্ত করবেন এবং এ অভিপ্রায়পত্র সংশ্লিষ্ট বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বা প্রতিষ্ঠানগুলোর সভাপতি হিসেবে তার মনোনয়ন হিসেবে গণ্য হবে’।

৫০ ধারায় বলা হয়েছে, ‘বিশেষ ধরনের গভর্নিং বডি বা ম্যানেজিং কমিটি- বিশেষ পরিস্থিতিতে বোর্ড এবং সরকারের পূর্বানুমোদক্রমে, মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক স্তরের কোনো বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের জন্য বিশেষ ধরনের গভর্নিং বডি বা ক্ষেত্রমতে ম্যানেজিং কমিটি করা যাবে’।

তবে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল ইসরাত জাহান সেদিন জানিয়েছিলেন, আদালত ম্যানেজিং কমিটিতে ইচ্ছা পোষণ করে সংসদ সদস্যদের সভাপতি হওয়ার বিধান এবং বিশেষ কমিটির বিধান সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক ঘোষণা করেছেন। এর ফলে এখন সংসদ সদস্যরা ইচ্ছে করলেই কোনো শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সভাপতি হতে পারবেন না। সভাপতি হতে হলে তাদের নির্বাচনের মাধ্যমে আসতে হবে। এছাড়াও প্রতিষ্ঠানগুলোর বিশেষ কমিটি করা যাবে না।

পরে ৮ জুন হাইকোর্টের ওই রায়ের স্থগিতাদেশ চেয়ে আপিল বিভাগের চেম্বার বিচারপতির আদালতে আবেদন করেন রাষ্ট্রপক্ষ ও ভিকারুন্নেসা নুন স্কুলের গবর্নিং বডির সভাপতি রাশেদ খান মেনন।  ওইদিন স্থগিতাদেশ না দিয়ে আবেদনটি ১২ জুন শুনানির জন্য আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চে পাঠিয়ে দেন চেম্বার বিচারপতি মির্জা হোসেইন হায়দার।

এর আগে গত ১৩ এপ্রিল ওই রিট আবেদনের শুনানি নিয়ে বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি হিসেবে সংসদ সদস্যদের দায়িত্ব পালন এবং নির্বাচন ছাড়া কমিটি গঠন কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না-তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেন হাইকোর্ট।

এদিকে আজ এ মামলার শুনানিতে অ্যাটর্নি জেনারেল রাষ্ট্রপক্ষ ও ভিকারুন্নেসা নুন স্কুল অ্যান্ড কলেজের পক্ষে শুনানি করেছেন বলে অভিযোগ করেছেন ইউনুছ আলী আকন্দ। তিনি বলেন, অ্যাটর্নি জেনারেল সংবিধানের ৬৪ অনুচ্ছেদ লঙঘন করেছেন। উভয়পক্ষে শুনানি করে। অ্যাটর্নি জোরেল বার কাউন্সিলের বিধিমালাও ভঙ্গ করেছেন বলে অভিযোগ করেন এই আইনজীবী।

আওয়ার ইসলাম টোয়েন্টিফোর /আরআর


সম্পর্কিত খবর


সর্বশেষ সংবাদ