বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪ ।। ১৪ চৈত্র ১৪৩০ ।। ১৮ রমজান ১৪৪৫


ইসলামি সঙ্গীতপ্রেমী জেনারেশন তৈরি করা দরকার

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

bodrujjamanমুহাম্মদ বদরুজ্জামান। একজন ইসলামি সঙ্গীতশিল্পী। সঙ্গীত পরিচালক। প্রায় এক যুগ ধরে কাজ করে চলেছেন জাতীয় সাংস্কৃতিক সংগঠন কলরব শিল্পীগোষ্ঠিতে। বর্তমানে দায়িত্ব পালন করছেন যুগ্ম নির্বাহী পরিচালক হিসেবে।

'বিমুগ্ধ লগন' 'শংকিত স্বাধীনতা' নামে তার একক দুটি এলব্যাম রয়েছে। এছাড়াও প্রায় ৫০টির মত সঙ্গীত তিনি সুর করেছেন। ১৯৯০ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারি জন্ম নেয়া এ শিল্পী দেশে বিদেশে প্রায় ৪০০টির মত কনসার্ট করে ইসলামি সঙ্গীতপিপাসুদের মন জয় করে নিয়েছেন। সম্প্রতি সৌদি আরবে ৪টি কনসার্ট এবং ওমরাহ পালন করে দেশে ফিরেছেন তিনি। আওয়ার ইসলাম ২৪ ডটকমের পক্ষ থেকে এক সন্ধ্যায় তার মুখোমুখি হয়েছিলেন আমিন মুনশি

আপনার পরিবারের ব্যাকগ্রাউন্ডটা কেমন ছিল?
আমার বাবা ছিলেন ডিফেন্সের লোক। সেনাবাহিনীতে চাকরি করতেন। আর ভাইবোন আমরা পাঁচজন। তার মধ্যে আমি তৃতীয়।
লেখাপড়ার শুরুটা কিভাবে?
আমি স্কুলে ক্লাস ফাইভ পর্যন্ত পড়েছি। তারপর একরকম নিজের ইচ্ছাতেই মাদরাসায় ভর্তি হয়েছি। এরপর ২০০৩সালে হিফজ শেষ করেছি। ২০১২ সালে দাওরায়ে হাদিস (মাষ্টার্স) কমপ্লিট করেছি। পাশাপাশি দাখিল, আলিম পরীক্ষা দিয়েছি। বাংলাদেশ ইসলামী ইউনিভার্সিটি থেকে অনার্স পাশ করেছি এই বছর।

সংগীত জগতে কিভাবে আসা?
এক ধরনের ভালোলাগা থেকেই এসেছি। ২০০৪ সালের শুরুতে দাবানল শিল্পীগোষ্ঠিতে ক্লাস করতাম। তারপর আইনুদ্দিন আল আজাদ ভাইকে দেখলাম। ওনাকে দেখেই অনুপ্রেরণা পেলাম। ওই বছরের শেষ দিকে ওনার সাথে পরিচিত হলাম। একসময় কলরবে চলে আসি। আর আমি যা করি চিন্তা ভাবনা করেই তারপর কাজটা করি।badrujjaman

এখন পর্যন্ত কতটুকু কাজ করতে পেরেছেন?
মুহাম্মদ বদরুজ্জামান : এখন পর্যন্ত হয়ত সেই রকম কিছুই করতে পারিনি। তবে আমি আবেগে বিশ্বাসী নই। ধীরে ধীরে আগে নিজের অবস্থানটা পোক্ত করতে চাই। যাতে মানুষের মাঝে আমার একটা চাহিদা বা আমার গানের চাহিদা তৈরি হয়।

আপনি তো কলরবের দায়িত্বশীলদের একজন। তো কলরবের ব্যাপারে আপনার প্রত্যাশা কী?

কলরব বর্তমানে যে অবস্থানে আছে আলহামদুলিল্লাহ আগামি একশ বছর যেন এই অবস্থানটা ধরে রাখতে পারে। আমরা আসলে যে জিনিসটা চাই তা হল-আমাদের গান, আমাদের যে সত্যের আহবান সেটা যেন বাংলা ভাষাভাষী প্রতিটি মানুষের ঘরে পৌঁছে যায়। আমরা সেভাবেই এগুতে চাই।

একজন সংগীতশিল্পী হিসেবে কতটা বড় হতে চান?
আমি আগেই বলেছি আমি আবেগে বিশ্বাসী নই; বাস্তবতাকে নিয়েই পথ চলতে পছন্দ করি। আমি আসলে স্বয়ংসম্পন্ন হতে চাই। কলরবকেও স্বয়ংসম্পন্ন প্রতিষ্ঠানে রূপ দিতে চাই। সার্বিকভাবেই মাথা উঁচু করে বাঁচতে চাই। কারো মুখাপেক্ষী হয়ে বা পরনির্ভরশীল হয়ে থাকতে আমার ভালো লাগে না।

ইউটিউবে আপনার 'চলার পথে' গানটির ভিডিও অনেক প্রশংসিত হয়েছে। এ সম্পর্কে আপনার অনুভূতি কি?
এই গানটিতে আসলে এক ধরনের ইঙ্গিত দেয়া হয়েছে। আমরা তো মাত্র পথচলা শুরু করেছি। আমাদের মন্জিল তো অনেক দূর। সে দিক থেকে আমি মনে করি গানটি অনেক ভালো হয়েছে। দেশ-বিদেশের অনেকেই আমাকে ধন্যবাদ জানিয়েছে ভিডিওটি দেখার পর। আর সামনে তো আমাদের আরো গানের ভিডিও বের হবে। আশা করি সেগুলি এরচেয়েও বেশি সুন্দর হবে।

সংগীতচর্চা তো করেছেন,সামনেও করবেন। সাহিত্যচর্চার ব্যাপারে কি কোন আগ্রহ ছিল আপনার?
সংগীত, সাহিত্য দুটোই শিল্প। সাহিত্যের প্রতি ঝোঁক ছিল অবশ্য। কিন্তু একসাথে তো আর সবকিছু করা হয়ে উঠেনা। মাদরাসায় পড়া অবস্থায় দেয়ালিকায় আমি কবিতা দিয়েছিলাম। পাক্ষিক মুক্ত আওয়াজ, আদর্শ নারী, আন নাবাতে আমার বেশ কয়েকটি প্রবন্ধ ছাপা হয়েছে।

ব্যক্তিগতভাবে কার গান আপনাকে মুগ্ধ করে বা কার গান বেশি শোনা হয় ?
নির্দিষ্ট করে কারো নাম বলতে চাই না। তবে সবার গানই শুনি। শুনতে হয়। যেহেতু সংগীত পরিচালনার সাথে যুক্ত আছি তাই সবার গানগুলিই শুনতে হয়। কে কেমন করছে সেটা খেয়াল করি।

আপনার যারা ভক্ত আছে তাদের উদ্দেশ্যে কিছু বলতে চান?
জি। ভক্তদের বলতে চাই ইসলামি সংগীত শুধু শুনলেই হবেনা। সেটাকে ধারণ করতে হবে। গানের মধ্যে যে ম্যাসেজ দেয়া হয় সেটাকে বুঝার চেষ্টা করতে হবে। আর ইসলামি সাংস্কৃতিক আন্দোলনকে এগিয়ে নিতে একটি সংগীতপ্রেমী জেনারেশন তৈরি করা দরকার। আপনারা এক্ষেত্রে আমাদের সহযোগিতা করুন।

আওয়ার ইসলাম টোয়েন্টিফোর ডটকম /এআর


সম্পর্কিত খবর


সর্বশেষ সংবাদ